(নেত্রকোণা) প্রতিনিধি: নেত্রকোণার মদনে ধান চুরির অভিযোগে ভিক্ষুক বারেক মিয়াকে মারধর করে উল্টো তার বিরুদ্ধেই থানায় মামলা দায়ের করে নির্যাতনকারী মাসুদ মিয়ার ভাই খায়রুল মিয়া। পরে ভিক্ষুক বারেক মিয়াকে গতকাল বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) রাতে কোর্টে প্রেরণ করা হলে আদালত তাকে জামিনে মুক্তি দেন। আব্দুল বারেক (৫৫) এর বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার বনহাটি গ্রামের মৃত আব্দুল গফুরের ছেলে। নির্যাতনকারী মাসুদ মিয়া মদন উপজেলার গোবিন্দশ্রী বারঘরিয়া গ্রামের মোক্তার হোসেনের ছেলে। নেত্রকোণা কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক (এসআই) আবদুর রহমান আজ ৩০ এপ্রিল শুক্রবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, কয়েক বছর ধরে ওই ভিক্ষুক বৈশাখ মাস এলে হাওরাঞ্চলে এসে ধান ভিক্ষা করেন। এ বছর মদন উপজেলার গোবিন্দশ্রী ইউনিয়নের বারগরি পূর্বহাটি গ্রামে আব্দুল খালেকের ছেলে ঝুমনের পরিত্যাক্ত ঘরে বসবাস করে ভিক্ষা করছিলেন। বুধবার (২৮ এপ্রিল) সকালে মুক্তার আলীর ছেলে খাইরুল ধান চুরির অভিযোগে ভিক্ষুককে বাঁশের খুঁটিতে বেঁধে রাখে। পরে তার ছোট ভাই মাসুদসহ কয়েকজন ঘণ্টাব্যাপী ওই ভিক্ষুককে মারধর করে। নির্যাতনের পর মদন থানার পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই বস্তা ধানসহ ওই ভিক্ষুকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। এ ঘটনার পর মোবাইলে ধারণ করা ভিডিও রাত আনুমানিক ১০টার দিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলে ওইদিন রাত ২টার দিকে মাসুদকে তার নিজ বাড়ি থেকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) উল্টো ভিক্ষুকের বিরুদ্ধে মদন থানায় চুরির মামলা দায়ের করে নির্যাতনকারীর ভাই খাইরুল মিয়া। এদিকে ভিক্ষুকের স্ত্রী পারভীন আক্তার বাদী হয়ে মাসুদ মিয়ার বিরুদ্ধেও একটি মামলা করেন। বৃহস্পতিবার ২৯ এপ্রিল বিকেলে চুরির মামলায় আবদুল বারেককে নেত্রকোণা আদালতে প্রেরণ করা হয়। এছাড়া নির্যাতনকারী মাসুদকেও আদালতে পাঠায় পুলিশ। পরে রাত ৮টার দিকে আবদুল বারেককে বিজ্ঞ বিচারক শাহাদাত হোসেন তার জামিন মঞ্জুর করেন। একই সময় নির্যাতনকারী মাসুদ মিয়াকে আদালতে হাজির করলে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।