করোনাভাইরাসের (কোভিড ১৯) উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সংক্রমণ রোধে মিরপুরে কঠোরভাবে সরকারি বিধিনিষেধ পালিত হচ্ছে। শনিবার মিরপুরের সড়কগুলোতে পরিবহন চলাচলের চাপ অনেকটাই কম দেখা গেছে। অকারণে ব্যক্তিগত পরিবহন দিয়ে বের হলেই তাকে মামলা ও জরিমানার কবলে পড়তে হচ্ছে। শনিবার মিরপুরের বিভিন্ন চেকপোস্ট ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
কলেজশিক্ষার্থী রায়হান মোটরসাইকেল নিয়ে হেলমেট ছাড়াই বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন। এ সময় মিরপুর জনতা হাউজিং চেকপোস্টের দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা তাকে আটকে দেন। বাহিরে বের হওয়ার কারণ জানতে চাইলে বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন বলে জানান। জরুরি কারণ ছাড়া বের হওয়ায় তাকে ট্রাফিক আইনে দুই হাজার টাকার মামলা দেয়া হয়েছে।
রায়হানের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, এলাকার মধ্যে সমস্যা হবে না বলে আমি বের হয়েছিলাম। অনেক অনুরোধ করার পরও আমার গাড়ির নামে পুলিশ মামলা দিয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে বন্ধুর বাসায় না গিয়ে বাড়িতে চলে যাচ্ছেন বলে জানান। লকডাউন দেখতে আরেক ব্যক্তি মোটরসাইকেল দিয়ে বাহিরে বের হয়ে তিনিও এক হাজার টাকার মামলার কবলে পড়েন।
এই চেকপোস্টের দায়িত্বরত পুলিশের এএসআই সজীব জাগো নিউজকে বলেন, সরকারি নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে আমরা দ্বিতীয় দিনে ভোর পৌনে ৬টা থেকে জনতা হাউজিং চেকপোস্টে ডিউটিতে দাঁড়িয়েছি। রাস্তায় চলাচলরত গাড়িগুলোকে আটকে বাহিরে বের হওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হচ্ছে। যারা জরুরি ও যৌক্তিক কারণে বের হয়েছেন তাদের ছেড়ে দিচ্ছি, অকারণে বের হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, সাধারণত ডাক্তার দেখাতে, করোনার টিকা ও পরীক্ষা করতে এবং জরুরি সেবার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিরা রাস্তায় বের হচ্ছেন। সবাই সচেতন হলে সরকারের দেয়া কঠোর বিধিনিষেধ কার্যকর হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
অন্যদিকে মোটরসাইকেলে কুষ্টিয়া থেকে স্ত্রীকে নিয়ে বাইকে করে ঢাকায় ফিরেছেন পাপ্পু রহমান। ফার্মাসিটিক্যালস কোম্পানিতে চাকরি করেন তিনি। শারীরিক অসুস্থতার কারণে নির্ধারিত সময়ে ঢাকায় ফেরা সম্ভব না হওয়ায় আজ (২৪ জুলাই) ভোর ৪টায় কুষ্টিয়া থেকে রওনা দেন। বাংলা কলেজ চেকপোস্ট পার হওয়ার সময় পুলিশ তাকে আটকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
পাপ্পুর কাছে জানতে চাইলে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, শারীরিক অসুস্থতার কারণে লকডাউনের আগে ঢাকায় ফিরতে পারিনি। এ কারণে আজ ভোরে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিই। যেহেতু অফিস শুরু হয়েছে তাই বাধ্য হয়ে ঢাকায় আসতে হচ্ছে বলে জানান তিনি। মানবিক কারণে পুলিশকে তাকে ছেড়ে দিতে দেখা যায়।
বাংলা কলেজ পুলিশ চেকপোস্টে দায়িত্বরত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর সাইফুল আলম বলেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক আমরা কড়াকড়িভাবে বিধিনিষেধ বাস্তবায়ন করছি। অযৌক্তিক ও কারণ ছাড়া কেউ বের হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, ঈদে গ্রামের বাড়িতে গিয়ে অনেক মানুষ ঢাকায় ফিরতে পারেননি বলে মহানগরের সড়কগুলোতে ব্যক্তিগত পরিবহন কম পরিমাণে চলাচল করছে। তবে গতকালের চেয়ে প্রতিনিয়ত পরিবহনের চাপ বাড়ছে বলে জানান তিনি।
তবে বৃষ্টি নামায় সরকারি বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে কিছুক্ষণ শিথিলতা দেখা যায়। বৃষ্টির কারণে পুলিশ সদস্যরা নিরাপদ স্থানে দাঁড়িয়ে থাকায় বিনা বাধায় সব ধরনের পরিবহন চলাচল করতে দেখা যায়।